mithun-miya1-300x141

রবিউল ইসলাম

গনমাধ্যমের অবস্থান কাদের পক্ষে পাশ্চাত্যের কর্পোরেটমিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেখানে মূলত মালিক বিজ্ঞাপনদাতা ও তাদের সহযোগীদের স্বার্থ দেখলেই চলে, আমাদের মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেখানে এগুলোর পাশাপাশি সরকারের ও ব্যবসায়ী মহলের চাপের কথাও মাথায় রাখে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের যৌক্তিক অন্দোলনে গনমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে পুরানো ঢাকার বিচ্ছিন্ন মানববন্ধন কিছু গনমাধ্যম প্রথম পাতায় ট্রিটমেন্ট কতটা গুরুত্ববহন করে।দেশের প্রথম সারির একটি জাতীয় দৈনিকে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবন নির্মাণের দাবি নিয়ে যে ইস্যু তৈরি হয়েছে সেই ইস্যুকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পক্ষপাতমূলক এজেন্ডা সেট করতে চায়।এজেন্ডা সেটিং বলতে বুঝানো হয় অনেক গুলো ইস্যুর মধ্য হতে এক বা একাধিক ইস্যুকে মিডিয়াকে এমনভাবে কাভারেজ দিবে যাতে মানুষ সেই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়। এটি হচ্ছে এক ধরনের ধারণা যাতে প্রচার মাধ্যমগুলো বিভিন্ন প্রচারনার মাধ্যমে কোন বিষয় জনগণের সামনে তুলে ধরে যাতে মানুষ তা নিয়ে চিন্তা করে ও কথা বলে। সোজা কথায় বলতে গেলে জনপ্রিয় এই মাধ্যমটির ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে প্রকাশিত প্রথম পাতার প্রথম ছবি ও ক্যাপশন শুধুমাত্র প্রচারণা কৌশলই না, নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীকে সামনে রেখে সেটি বাস্তবায়নে কাজ করছে।ফরাসী দার্শনিক রোঁলা বার্থ ইমেজ বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ডেনোটেটিভ মিনিং ও কনোটেটিভ মিনিং এর কথা বলেছেন। মাধ্যমটির প্রকাশিত এই ছবিটি বিশ্লেষণ করলে দাড়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবিকে নস্যাৎ করা। পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় “ মাঠ চাই খেলার মাঠ চাই এই প্ল্যাকার্ড জবি শিক্ষার্থীদের কাছে মৃত্যু পরোয়ানার সমতুল্য ও শিক্ষার্থীদের সাথে পুরানো ঢাকাবাসীর বৈরীতা। কেবলই এটি ছবি নাকি গুটিকয়েক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের মনোরঞ্জন ?

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন নিয়ে সবারই জানা। অনেক বেশি ন্যায় আন্দোলন, অহিংস আন্দোলন । এই আন্দোলনের সংবাদের সাথে জনদূর্ভোগের কথাও উত্থাপিত হয়েছে কিন্তু আপনাদের কি একবারও মনে পড়লো না জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিনই চরম দূর্ভোগের শিকার। সংহতি সমাবেশে জনস্রোতের ছবি, রোদ ঝড় উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ছবি কি প্রকাশ করেছেন ? আপনারা তখন কোথায় ছিলেন ? উল্টোদিকে মাত্র পনের বিশ জনের মানববন্ধনের ছবি দিয়ে প্রথম পাতায় ছাপিয়ে কাটতি বাড়ান। আপনাদের পলিসিতে সংবাদের সংবাদমূল্য কি এই? একথা সবার অজানা নয় যে জবি জন্মলগ্ন থেকে রাষ্ট্রের বরাদ্দ ও অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত এখন দেখি প্রভাবশালী মাধ্যমেরও অবমূল্যায়নের শিকার। পুরানো ঢাকাবাসীর সাথে তো শিক্ষার্থীদের কোনো বৈরীতা নেই এর প্রমাণ বৈশাখী উৎসব, স্বরস্বতী পূজা, সাকরাইন প্রভৃতি। তাদের বাড়িতেই তো শিক্ষার্থীরা ভাড়াটিয়া এটি একটি মেলবন্ধন। এলাকাবাসী বুঝবে কেন হল ও জাদুঘর, বা হল ও খেলার মাঠ অথবা মুক্তমঞ্চ। অবশ্যই বুঝবে কেননা এটি একে অন্যের পরিপূরক।

 

শিক্ষার্থী

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।


একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে