images3

বিডি নীয়ালা নিউজ(২২ই ফেব্রুয়ারী১৬)-স্বাস্থ ও চিকিৎসা প্রতিবেদনঃ  অন্যতম একটি খাদ্য। আলু সবজি হিসেবে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সবজির পাশাপাশি নানা মুখরোচক খাবার তৈরীতে আলুর ব্যবহার লক্ষণীয়। খাবার হিসেবে আলুর যত পরিচিত ঔষধ হিসেবে তেমন পরিচিতি নেই বললেই চলে। সম্প্রতি ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এম.এ রহিম এমন ছয় ধরণের রঙ্গিন জাতের আলু উদ্ভাবন করেছেন যা প্রাণঘাতি ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম। এছাড়া রঙ্গিন আলু অ্যালজিমার ডিজিজ, অ্যাজমা, ক্রোনিকলাঞ্চ ডিজিজ, ক্রোনিকপেইন, ডায়াবেটিস, গ্যাষ্ট্রিক, হার্টডিজিজ, ইনক্লামেটরিবোয়েল ডিজিজ, স্ট্রোক রিউমাটোয়েড, লুপাস অথবা লিভার ডিজিজ, আলসার, কিডনি ডিজিজ, হাইপারটেনশন লামবাগো ও সোর সুলডার সেক্লারোডার্মা রোগের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করে। সাধারণ আলুতে যে খাদ্যমান থাকে রঙ্গিন আলুতে সমস্ত খাদ্যমান বিদ্যমান থাকে। তবে অতিরিক্ত হিসেবে এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট তৈরিকারী অ্যান্থোসায়ানিন, ফ্লাভেনয়েডস ও ফেনোলিক পদার্থ লুটিন থাকে যা উচ্চমাত্রার ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান। এই আলুতে আরও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি এবং আয়রন। এছাড়া ভিটামিন-ই১, ই২, ই৬, স্টার্চ, সুগার, প্রোটিন এবং পটাশিয়ামের লবনসহ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়োডিন ও ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান। শরীরের জন্য ভিটামিন-ই দরকার, যা বিষণœতা দূর করে এবং ভিটামিন-ই৬-এ এন্টিটক্সিক উপাদান বিদ্যমান যা শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে, বিশেষ করে যেসব লোক শিল্প কারখানায় কাজ করে তারা পরিবেশগতভাবে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, রঙিন আলুর রং যত বেশি গাঢ় হয়, সেই আলুতে তত বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এ ছাড়া রঙ্গিন আলুর মাংসল অংশের তুলনায় চামড়া বা খোসার প্রায় ১০ গুন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে।

অধ্যাপক ড. এম.এ রহিম ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন-মেডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শ্যালি জ্যাংক্স ও অধ্যাপক ড. ফিলিপ ডাবুক্কসাইমনের কাছ থেকে ২৮ টি রঙ্গিন গোল আলুর বীজ বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। প্রায় চার বছর গবেষণা করে তিনি অধিক ফলন ও রোগবালাই মুক্ত ৬ জাতের আলুর নতুন লাইন বাছাই করেন। এ কাজে তাকে সাহায্য করেন অধ্যয়নরত কয়েকজন মাস্টার্স শিক্ষার্থী ও পিএইচডি ফেলোরা।

উদ্ভাবিত আলুগুলোর বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে ড. রহিম জানান, ৬ টি জাতই নভেম্বর মাসে বীজ বপন করলে জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারি মাসে আলু সংগ্রহ করা যায়। এই জাতের রঙিন আলুগুলোর উৎপাদন হেক্টর প্রতি প্রায় ২০ থেকে ২৫ টন। এসব ফসলের জন্য উর্বর বেলে-দোআঁশ মাটি উত্তম। তবে বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতেই এসব আলুর চাষ সম্ভব। আমাদের দেশের প্রচলিত ডায়মন্ড, কার্ডিনাল প্রভৃতি জাতের আলুতে জলীয় অংশ বেশি থাকে, ফলে এসব আলু দ্রুত পঁচন ধরে। অথচ উদ্ভাবিত রঙ্গিন আলুতে শুষ্ক পদার্থ বেশি থাকায় সহজেই কৃষক নিজ ঘরে অনেক দিন এটি সংরক্ষণ করতে পারবে।

তবে গবেষণায় উদ্ভাবিত নতুন আলুর জাত ছয়টি এখনো সরকারিভাবে অনুমোদন পায়নি। অনুমোদন পেলেই দ্রুত মাঠপর্যায়ের কৃষকরা সহজেই এ আলুর চারা রোপণ করতে পারবে।

লেখকঃ

মো: ইউসুফ আলী

শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক , মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ,ময়মনসিংহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে