সাম্প্রতিক সংবাদ

 কবরে ‘চিল্লায়’ গেলেন ‘জিন্দাবাবা’ জিতু মিয়া

jindababa

বিডি নীয়ালা নিউজ(২৮ই মার্চ১৬)-অনলাইন প্রতিবেদনঃ বৃদ্ধর বয়স ৭০ বছরের বেশি হবে। সাতদিন আগে এসে উপস্থিত হন হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নয়াপাথারিয়া গ্রামে। গত শনিবার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পুকুরে ভেসে বেড়িয়েছেন। ওই গ্রামে তো বটেই আশপাশের গ্রামের মানুষও বৃদ্ধকে দেখতে আসেন।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নয়াপাথারিয়া গ্রামে কবর খুঁড়ে একপর্যায়ে ‘জিন্দাবাবা’কে ভেতরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি : এনটিভি

আজ রোববার দুপুরে ওই বৃদ্ধ স্বেচ্ছায় কবরে অবস্থান নিয়েছেন। তিনদিন পর তিনি কবর থেকে উঠবেন বলে জানালেন। ওই বৃদ্ধের নাম জিতু মিয়া। কিন্তু গ্রামের সবাই তাঁকে ‘জিন্দাবাবা’ নামে চিনে।

নয়াপাথারিয়া গ্রামের এক পুকুরপাড়ে আজ দুপুর আড়াইটার দিকে কবরে প্রবেশ করেন জিতু মিয়া। তাঁর সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ৩০০ গ্রাম আঙ্গুর আর একটি বিস্কুটের ‘বৈয়াম’। আগামী মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় তাঁকে কবর থেকে ওঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

 

জিতু মিয়ার দাবি, এর আগেও তিনি একাধিকবার কবরে অবস্থান করেছেন। তিনি জানান, গত ৪৫ বছর ধরে ভারতসহ দেশের বিভিন্ন মাজারে মাজারে ‘সাধনা’ করেছেন। তিনি হবিগঞ্জ শহরতলীর মরহুম আধ্যাত্মিক সাধক দেওয়ান মাহবুব রাজার ভক্ত। স্বপ্নের মাধ্যমে মাহবুব রাজার কাছ থেকে ‘চিল্লা’য় যাওয়ার নির্দেশ পেয়েছেন তিনি। ‘চিল্লা’ মানে হচ্ছে কবরে প্রবেশ করা ।

 

জিতু মিয়া বলেন, ‘এর আগে ১১ বার আমি চিল্লায় গিয়েছি। আর এটাই আমার শেষ চিল্লা।’ তিনি বলেন, ‘আমি নিজের ইচ্ছায় কবরে যাচ্ছি। আমি আগেও গিয়েছি। যদি কোথাও লিখে বলতে হয় আমি তাও রাজি আছি। আমি যদি মারাও যাই তবুও কেউ দায়ী নয়। আমার দায়দায়িত্ব আমার।’

এদিকে নয়াপাথারিয়া গ্রামে নেমেছে মানুষের ঢল। কেউ আনছে টাকা, কেউবা খাবার। সবই ‘জিন্দাবাবা’র জন্য। ‘জিন্দাবাবা’ও দিচ্ছেন পরামর্শ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিন দিয়ে ঘেরাও করা একটি জায়গায় মাটি কাটা হয়। সেখানে কবর খোঁড়া হয়। সামনে থেকেই সব তদারকি করেন জিতু মিয়া। কবরের ওপর সমান করে বাঁশও দেওয়া হয়। বাঁশের ওপর পাটি বিছানো হয়। এক পর্যায়ে সবাই মিলে জিতু মিয়াকে কবরে ঢুকিয়ে দিয়ে পাটির ওপর মাটি দিয়ে ঢেকে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জিতু মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলায়। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার তিমিরপুর গ্রামে বাস করছেন তিনি। সংসার জীবনে তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা। কিন্তু সংসারে তিনি থাকেন না। সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন।

 

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
shared on wplocker.com